আপনি কি ফ্রিল্যান্সিং এ নতুন? চলুন আপনাকে একটা টোটাল গাইডলাইন দেয়া যাক ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে। আমরা এখানে ফ্রিল্যান্সিং এর স্ট্রার্ট আপ এর জটিলতা কাটিয়ে কিভাবে সুন্দর ভাবে সুইচ অন করবেন একজন প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করবো।
চলুন শুরু করা যাক তাহলে,
এক কথায় ফ্রিল্যান্সিং হলো অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়। এমন একটা টাকা উপার্জন করার উপায়, যেটার সাহায্যে খুব সহজেই ঘরে বসেই আপনি করতে পারেন মোটা অংকের ব্যাংক ব্যালেন্স।
মজার ব্যাপার জানেন,আমাদের দেশেই এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা মাস শেষে এত টাকা আয় করছে যা কোন ফুল টাইম জব হোল্ডার অথবা ব্যবসায়ী দের থেকে ও অনেক বেশি।
যাই হোক, এবার আসেন থিওরীর ভাষাতে –
আপনি যদি কোন নিয়োগকর্তার কাছে দীর্ঘমেয়াদী কাজের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হয়ে নিজে নিজেই সার্ভিস প্রদান করেন কোন কন্ট্রাক্ট অথবা প্রজেক্ট ভিত্তিক, আপনি তাহলে একজন ফ্রিল্যান্সার এবং আপনার কাজকেই তখন বলা হবে ফ্রিল্যান্সিং।
ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে একধরণের সেল্ফ, ইম্পলয়মেন্ট অথবা স্বনির্ভর কাজ এবং এখানে সরাসরি কোন কোম্পানি বা ব্যাক্তির আন্ডারে লম্বা সময়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ না হয়ে প্রজেক্ট অথবা কন্ট্রাক্ট এ কাজ করা হয়।
সরাসরি কোম্পানির নিয়োগ না পেয়েও ফ্রিল্যান্সার রা বিভিন্ন কোম্পানির কাজ করে থাকে। কোম্পানি গুলো তাদের বিভিন্ন কাজের জন্য রিম্যুটলি ফ্রিল্যান্সার দের হায়ার করে থাকেন। এখানে কোম্পানির অন্য কর্মীদের সাথে ফ্রিল্যান্সার দের পার্থক্য হলো ফ্রিল্যান্সার রা কোম্পানির ব্যাসিক সুবিধা গুলো যেমন, হেলথ ইন্সুরেন্স,পেনশন,বোনাস ইত্যাদি পাবেন না।
ফ্রিল্যান্সাররা তাদের হলিডে, অসুস্থতা ইত্যাদির জন্য নিজেরাই পে করে, এমনকি তারা কখন কাজ করবে, এবং তাদের ওয়ার্কিং আওয়ার ও তারা সেট করে নেয়।
তাই একজন ফ্রিল্যান্সার রিম্যুটলি ওয়ার্ক ফ্রম হোম করবে না সরাসরি ক্লায়েন্টের অফিসে যেয়ে কাজ করবে এটা নির্ভর করে তার নিজস্ব পছন্দ এবং লাইফ স্টাইলের উপরে।
ফ্রিল্যান্সিং জব এখন এত বিশাল ক্ষেত্র নিয়ে শাখাপ্রশাখা গজিয়েছে যে টাইপ বলতে গেলে অসংখ্য বলতে হবে। তবে ফ্রিল্যান্সার যেই হোক, যে কাজ টাই করুক তাদের সবারই মোটামোটি হাই লেভেলের স্কিল এবং নলেজ থাকে ফ্রিল্যান্সিং এড়িয়াতে।
মোস্ট কমন ফ্রিল্যান্সিং জবগুলো হলো
গ্রাফিকস ডিজাইনার, রাইটার, প্রোগ্রামার,ট্রান্সলেটর, প্রজেক্ট ম্যানেজার, এস ই ও এক্সপার্ট, ওয়েব ডেভেলপার, ভিডিও ক্রিয়েটর, এনিমেটর, এরকম আরো বহু।
মোদ্দা কথা আপনি যেই ফিল্ডেই কোয়ালিফাইড হোন, যদি আপনি কন্ট্রাক্ট ব্যাসিস রিম্যুটলি কাজ করেন, তাহলেই আপনি ফ্রিল্যান্সার।
আপনারা জানেন যে কোন কিছুর স্টার্টআপ হয় খুব সহজ অথবা খুব কঠিন। আর যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং একটি স্বনির্ভর পেশা তাই চ্যালেঞ্জ কিন্তু এখানে মারাত্মক বেশি। তো সবার আগে আপনার যা লাগবে, সেটা হলো এমন কোন কাজের দক্ষতা যেটা আপনি অনলাইনে করতে পারেন, অথবা প্রজেক্ট আকারে স্বনির্ভরশীল হিসেবে করতে পারেন।
যাই হোক, কোন কাজে একবার যখন আপনি দক্ষতা অর্জন করবেন, এরপরের ব্যাপার আসে আপনি কিভাবে আপনার কাজের প্রসার করবেন এবং কিভাবে আপনার কাজের ক্লায়েন্ট পাবেন।
এখানেই আসে অনলাইন বা ইন্টারনেট এর প্রয়োনীয়তা। আপনার স্কিল প্রসারের জন্য আপনাকে বিভিন্ন তাইশ্যাল নেটওয়ার্কস এ গিয়ে নিজের মার্কেটিং নিজেকেই করতে হবে।
এজন্য আপনাকে যেতে হবে বিভিন্ন Social media platform, social online group, Freelancing Marketplace ( like Upwork, Fiver, Freelancer.com) এরকম আরো বহু জায়গা রয়েছে। কাজ যখন আপনি শুরু করবেন, অটমেটিকভাবেই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সার কমিউনিটি তে এড হয়ে যাবেন এবং আরো বিস্তারিত জেনে যাবেন।
তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরুর প্রথম ধাপ হলো নিজের স্কিল ডেভেলপ করা, তারপরে তার মার্কেটিং বা প্রসার করা। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের মূলমন্ত্র হলো নিজের দক্ষতা, জ্ঞান, এক্সপেরিয়েন্স, ইত্যাদির প্রচার এবং প্রসার খুব ভালোভাবে অনলাইনে অথবা অফলাইনে করা।
এখানে একটা কথা বলে রাখি। যদিও ফ্রিল্যান্সিং মনে আমাদের দেশে ওয়ার্ক ফ্রম হোম, বা শুধু অনলাইনে কাজ বুঝায়। কিন্তু আপনি একবার চিন্তা করেন, যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং মনে চুক্তিবদ্ধ কাজ কোন প্রজেক্ট বা ক্লায়েন্ট এর আন্ডারে, কাজেই ফ্রিল্যান্সিং কেবল অনলাইন নয়, অফলাইন জব ও হতে পারে।
দাড়ান দাড়ান, আপনি কি আমার কথায় কনফিউজড হয়ে গেলেন? লেট মি এক্সপ্লেইন প্লিজ। ধরে নিন আপনি কারো বাড়িতে এক ঘণ্টার জন্য তাদের কম্পিউটার ঠিক করতে যাবেন। এটাও কিন্তু একটা চুক্তিভিত্তিক স্বনির্ভরশীল কাজ। তাহলে তাইজাভাবে হিসেব করলে এটাও কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর আওতায় পড়ে।
তো কিভাবে শুরু করবেন চলে আসি সেই প্রসঙ্গে। আপনার স্কিল আছে, ইন্টারনেট আছে, আপনি ফ্রিল্যান্সার প্ল্যাটফর্ম গুলোও চিনেন, জানেন। তাই এখন আর অসুবিধা কোথায়? জাস্ট আপনি আপনার ভালো ভালো কয়েকটা কাজের স্যাম্পল রেডি করে ফেলুন এবং বিভিন্ন তাইশ্যাল মিডিয়ায় আপনার কাজ অনুযায়ী জব পোস্ট করুন, অন্যদের জব পোস্ট আপনার কাজের স্যাম্পল দিন। ক্লায়েন্ট কে নক দিন ইনবক্সে প্রফেশনালি কথা বলুন, তবে এগ্রেসিভ নয়।
ব্যাস আর কি? জাস্ট কাজ শুরু করে দিন, সুন্দর ভাবে প্রজেক্ট সাবমিট করে ডলার অথবা টাকা যাই দিক নিজের মানিব্যাগে ভরে নিন!
যাই হোক আমি স্টেপ বাই স্টেপ আরো কিছু বলতে চাই – কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন এর উপরে।
আপনি নিজে কোন কাজই জানেন না, অথবা কাজ কেবলমাত্র শিখলেন এই অবস্থায় আপনার কি উচিত হবে সরাসরি কোন ক্লায়েন্ট এর কাজ নিয়ে নেওয়া? বরংচ স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য আপনি কোন সিনিয়রদের সাথে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করতে পারেন। এটাতে অনেক ভালো ফিডব্যাক পাবেন, নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিও ভারী হবে।
অনেকেই আছে ফ্রিল্যান্সিং এ প্রথমে খুব আগ্রহ দেখায় কিন্তু কিছুদিন লেগে থাকার পরে যখন দুহাত ভরে ডলার আসে না তখন সুন্দর করে সব তল্লিতল্লা গুটিয়ে ফ্রিল্যান্সিং বাদ দেয়। তাই নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর পাশাপাশি আরো যেটা জরুরি সেটা হলো, আপনি কি করবেন, সত্যিই ফ্রিল্যান্সিং এ লেগে থাকার মত মনমানসিকতা আপনার আছে কিনা ইত্যাদি আপনাকে আগে সেট করে নিতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে ভাই, ফ্রিল্যান্সিং হলো লম্বা সময়ের কাহিনি। বিশেষ করে অনলাইনে যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান, অনেক সময় নিয়ে একাগ্রচিত্তে কাজ করে যেতে হয়।
আপনি কি পার্ট টাইম জব হিসেবে করবেন,নাকি টোটালি আপনার সবটুকু ডেডিকেশন আপনি ফ্রিল্যান্সিং এ দিবেন এটাও আপনাকে ভাবতে হবে। দেখেন, অনেকে কোম্পানি জবের পাশাপাশি অনলাইনে ও তাদের সার্ভিস ফ্রিল্যান্স করেন।আবার অনেকেই ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সার হিসেবেই কাজ করে থাকে।
আপনার কাজ,কাজের ধরন, বিষয় সবকিছুই খুব ভাইটাল আপনার এবং আপ্নার ক্যাপাবিলিটির উপর নির্ভর করে৷ অনলাইনে অনেক কাজ আছে। আপনি চাইলেই সব কাজ করতে পারবেন না। যেমন, রাইটিং, ওয়েব ডেভেলপিং, কোডিং, গ্রাফিকস ডিজাইনিং,ভিডিও এডিটিং, এরকম আরো বহু। এখন আপনাকে যা করতে হবে, আগে রিসার্স করতে হবে আপনি কোন বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী। আস্তে আস্তে একটা কাজ দিয়ে শুরু করলেন,এরপর অন্যদিকে ও ফোকাস করলেন। তবে যথেষ্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট থাকলে যে কোন এক বিষয় নিয়ে কাজ করলেই এনাফ। কারন লোকাল মার্কেট বলেন, আর ফরেন মার্কেট, কাজের অভাব নাই। আছে শুধু যোগ্য লোকের অভাব।
এই প্ল্যাটফর্ম গুলো মার্কেটপ্লেস হিসেবে পরিচিত।এখানে ক্লায়েন্ট রা টাকার বিনিময়ে সার্ভিস কিনেন এবং সেলার রা টাকা নিয়ে সার্ভিস দেন। প্রথমে যে কোন একটা মার্কেটপ্লেস এ একাউন্ট ওপেন করেন।মনে রাখবেন একাউন্টের সব ইনফরমেশন যেন অথেনটিক হয়।বিশেষ করে ন্যাশনাল আইডি কার্ড অনুযায়ী সব তথ্য দিয়ে একাউন্ট ওপেন করবেন।
যেহেতু এই সব প্লেসে অনেক ফ্রিল্যান্সার রা কাজ করেন, তাই এখানে কম্পিটিশন বেশি। কিন্তু আপনি যদি ঠিকঠাক কাজের প্রেজেন্টেশন করতে পারেন, অল্প সময়েই আপনার পরিচিতি হয়ে যাবে এবং তখন আর কাজ পেতে ঝামেলা নাই। অবশ্যই ধৈর্য্য সহকারে,বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করে অন টাইম প্রজেক্ট জমা দেয়ার মনমানসিকতা আপ্নার থাকতে হবে যদি আপনি সত্যিই একজন প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সার হতে চান।
এটা একটা কমন প্রশ্ন বিশেষ করে নতুন যারা এই সেক্টরে আসতে চান তাদের জন্য। যাই হোক নিউবিদের সুবিধার্থে আমরা টোটাল ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর কে তিন ধরনের স্কিলে ভাগ করবো,
মোটামুটি সহজ স্কিলের মধ্যে আমরা ফেলতে পারি গ্রাফিক্স ডিজাইন এর প্রাথমিক লেভেল এর কাজ গুলো। যেমন,
অনেকে আর্টিকেল রাইটিং কে মোটামুটি সহজ স্কিলের ক্যাটাগরিতে ফেলতে চায়, এক্ষেত্রে আমার ব্যাখা হচ্ছে, যদিও আর্টিকেল রাইটিং এর জন্য তেমন কোন এডভান্স টুলস বা কোর্স লাগে না, কিন্তু এখানে ক্রিয়েটিভির একটা ব্যাপার আছে সাথে ভালো ইংরেজি জানাটাও জরুরী।
তো যাই হোক, হালকা কঠিন স্কিলের মধ্যে আমরা ধরতে পারি,
মঝার ব্যাপার হলো এখন ইন্টারনেটেই প্রচুর ফ্রি ওয়েব টেম্পলেট পাওয়া যায়। এছাড়াও ক্যানভা এপস দিয়েও ভিডিও এডিটিং করা যায়। ক্যানভা এপস এর নাম শুনেছেন মেয়বি।
এরকম আরো বহু অনলাইন ভিডিও এবং ফটো এডিটিং টুলস এখন এভেইলেভেল।আপনার যদি কিছুটা কঠিন ফ্রিল্যান্সিং স্কিলের প্রতি ঝোক থাকে আপনি এইসব কম দামী অথবা ফ্রি টুলস দিয়ে আগে নিজে নিজে প্র্যাক্টিস করে নিতে পারবেন।
কঠিন ফ্রিল্যান্সিং স্কিলের মধ্যে আমরা ধরতে পারি,
কঠিন স্কিল গুলো ধাতস্থ করতে সময় লাগে বেশী, লাগে প্রফেশনাল হেল্প। কিন্তু বাংলাদেশের যেইসব ফ্রিল্যান্সার ভাইয়েরা ঘরে বসেই কামাচ্ছেন হাজার হাজার ডলার তাদের বেশীরভাগই এইসব স্কিলের অধিকারী ।
আপনি নিজে যত বড় ফ্রিল্যান্সারই হোন না কেন, যে কোন প্রজেক্ট পাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে আপনার রিক্রুটারের সাথে আলোচনায় বসতে হবে। এবং এই সময়ে আপনার প্রজেক্ট দাতা আপনার কাছ থেকে যেসব জিনিস এক্সপেক্ট করবেন তা হলো –
অনেকেই লোকাল ক্লায়েন্ট অথবা আইটি ফার্মে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজের বেশ ভালো একটা অবস্থান গড়ে নিয়েছেন। যাই হোক, দিন শেষে সবাই চায় আরো ভালো অবস্থানে যেতে।আমি বলছিনা আমাদের লোকাল ক্লায়েন্টের কাছে আমাদের ফ্রিল্যান্সার দের কোন ফিউচার নেই। কিন্তু আপনি এভাবে সেভাবে লোকাল ক্লায়েন্ট এর কাছে ধরনা দিয়ে কাজ যোগার করবেন, এভাবে তো আপনি ইন্টারন্যাশনাল ভাবে ও নিজের কোন অবস্থান দাড় করাতে পারবেন না।
তো এটার সমাধান কি? সমাধান আছে। ওয়ার্ল্ডওয়াইড বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে ফ্রিল্যান্সার দের সার্ভিস বেচা কেনা হয়।
হ্যাঁ তাইজা কথায় এসব ওয়েবসাইট অথবা মার্কেটপ্লেস এ ক্লায়েন্ট রা এসে তাদের প্রয়োজনীয় ফ্রিল্যান্সার খুজে থাকেন। আপনি যদি ক্লায়েন্ট এবং সেলার মানে ফ্রিল্যান্সার দের মিলনমেলা দেখতে চান, অবশ্যই এসব মার্কেটপ্লেস এর কোনটাতে আপনাকে যেতে হবে।
এটা সত্যিই, ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আমরা দু একটা মার্কেটপ্লেস যেমন, আপওয়ার্ক, ফাইবার এসবের নাম জানি। কিন্তু, আপনার কাজের ক্ষেত্র এখানেই সীমাবদ্ধ নয়।
দুনিয়াজুড়ে অসংখ্য ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে আপনি সহজেই আপনার কাজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পেতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সেরা ১০ টি মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
যে কোন কাজ শুরু করার আগেই তার সুবিধা অসুবিধা জানাটা অপরিহার্য। মনে করেন আপনি আগামিকাল কোথাও যাবেন জব এর ভাইবা দিতে, আপ্নি কি করবেন? আপনাকে যা করতে হবে, যেখানে ভাইবা দিতে যাবেন বিস্তারিত আগেই জেনে যাবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো জানতে এখানে ক্লিক করুন
গুগল ঘেটে দেখলাম, বেশির ভাগ নিউকামারদের প্রশ্নেই হলো কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো, ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন।
ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি এটা আসলে বলতে গেলে জোর দিতে হয় আবার সেই গাছের গোড়াতে। দ্যাট মিনস আপনার দক্ষতা এবং পরিচিতি অনুযায়ী আপনি এখানে কাজ পাবেন।এমনো হয় যে কাজের তেমন কোন চাহিদাই নেই, সেই এড়িয়াতেও কেউ না কেউ ধুমায়ে টাকা আর্ন করতেছে।
যাই হোক,ফ্রিল্যান্সিং এ আপাতত গ্রাফিকস ডিজাইন এবং প্রোগ্রামিং এর চাহিদা অনেক বেশি। গ্রাফিকস ডিজাইন এর ফিল্ড অনেক বড়, তাই এর অনেক সাব সেক্টর আছে যেগুলোর জনপ্রিয়তা আবার ডিফার করে।
ইদানীংকালে দেখতেছি মোশন গ্রাফিক্স এর চাহিদা বেড়ে গেছে, বেড়ে গেছে এনিমেশন এর কাজ ও।
সফটওয়ার প্রোগ্রামিং এর কাজ তো সারাজীবনই চাহিদার তুঙ্গে থাকবে,এটা আর নতুন করে বলার কিছু নাই।প্রোগ্রামিং এর কাজ ও গ্রাফিকস ডিজাইন এর মতোই। এটাও অনেক বড় এড়িয়া যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ যেমন, ওয়েব ডেভেলপিং ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি রয়েছে। অহ,মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপ এর কথা তো উল্লেখ করতে ভুলেই গেছিলাম।
এ প্রশ্ন টা দেখে একটা গল্প মনে পড়ে গেলো,
এক প্যাশেন্ট গেছেন এক ডাক্তার দেখাতে।তো ডাক্তার সে প্যাশেন্ট এর বিস্তারিত শুনে, তাকে কেবলমাত্র একটি মেডিসিন লিখে দিয়ে তার ভিজিট নিলেন ১০০০ টাকা।
তখন সেই প্যাশেন্ট ডাক্তার কে বলছিলো মাত্র একটা মেডিসিন লিখে দিছেন আর তার জন্য এক হাজার টাকা নিলেন!
ডাক্তার স্মিত হেসে জবাব দিলেন, এই একটা মেডিসিন কোন রোগের জন্য দিতে হবে সেটা জানার জন্য আমাকে এতগুলো বছর পড়াশোনা করে এরপর যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে। কাজেই আমি এই একটা মেডিসিন লিখার জন্য এক হাজার টাকা ভিজিট নিতেই পারি।
উদাহরণ টা যথাযথ হলোনা! কিন্তু কিছুটা তো মিললো, কোন কাজ সহজ,কোন কাজ কঠিন এটা আসলে বলা টাফ। কারন যে কাজ আপনি ভালো পারেন এটা অন্য জনের কাছে পাহাড়সম হতে পারে।
এজন্য ফ্রিল্যান্সিং এর যে কোন কোর্স এ ভর্তি হওয়ার আগে আপনার জন্য জরুরি হচ্ছে ইন্টারনেটে কিছুদিন ঘাটাঘাটি করা, ফ্রিল্যান্সিং এর রিলেটেড বিভিন্ন আর্টিকেল গুলো স্টাডি করা, বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখা।
আপনি যখন জানবেন ফ্রিল্যান্সার দের কি কি কাজের স্কোপ আছে, এবং কোন কাজ কিভাবে করা যায় এর ব্যাসিক ধারণা নিবেন,অটোমেটিক আপনার জন্য কোন টা সহজ সেটা আপনি বুঝে যাবেন।
যাই হোক আপাত দৃষ্টিতে, সহজ কয়েকটি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ বুলেট আকারে তুলে দিচ্ছি,
আমাদের দেশের অনেক প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সার রা আছেন, যারা কোন বড় ভাইয়ের কাছে যান নাই, কোন কোচিং সেন্টার এ ও ভর্তি হোন নাই। তারা কি করেছেন? আঠার মতোন দিন রাত এক করে তারা ইউটিউব আর গুগলে স্টাডি করেছেন, বিভিন্ন ফ্রি টিউটোরিয়াল ফলো করে করে কাজ শিখেছেন।
এবং এভাবে কাজ শিখতে অনেক সময় লাগে এটা সত্য,কিন্তু এভাবে কাজ শিখতে গেলে অনেক কিছু শিখা যায় এবং যাই শিখেন তা একেবারে মাথায় আগাগোড়া ঢুকে যায়।
তো একবার যখন আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কোন সেক্টর এ ধামাকা করতে চান, এখন আপনাকে কাজ শেখার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা করার জন্য যা করতে পারেন,
মোদ্দা কথা হলো, চাইলে আপনি ফ্রিতেই কাজ শিখতে পারেন এক্ষেত্রে সময় বেশী লাগবে হয়তো। অথবা চাইলে টাকা দিয়ে কোন পেইড কোর্স কিনে, অথবা সরাসরি কোন ফ্রিল্যান্স কোচিং, এ ভর্তি হয়ে হাতে কলমে কাজ শিখতে পারেন।
এরপরে আপনার প্রশ্ন আসতে পারে যে,
কাজ কোথায় করবেন।ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ আছে যেখানে লোকাল বায়ার রা বিভিন্ন কাজ করিয়ে নেন জব পোস্ট দিয়ে। আপনার প্রাথমিক টার্গেট হতে পারে এই গ্রুপ গুলো তথা লোকাল বায়ার রা।
এইভাবে কিছুদিন কাজ করার পরে, যখন বুঝবেন আপনার মোটামুটি একটা কাজের দক্ষতা চলে আসছে,প্লাস আপনি কাজ নিয়ে নাউ অল ডিস্কাস ও করতে পারেন নির্ধিদ্বায় এবার আপনি মার্কেটপ্লেস গুলো টার্গেট করেন।অসংখ্য ভালো ভালো মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার সার্ভিস সেল করতে পারেন। এইসব মার্কেট প্লেসে বায়ার জব পোস্ট করে বিস্তারিত লিখে, আপনাকে সেখানে বিড করতে হবে। এরপর আপনার বায়ার আপনার সাথে কথা বলে যদি আপনাকে জবটি দেয়, আপনি কাজ টা করতে পারবেন।এবং কাজ শেষে আপনার পেমেন্ট টাও মার্কেটপ্লেস এ দিয়ে দিবে।
তো কাজ কিভাবে করবেন, কই করবেন, সবই তো জানলেন। যখন ফরেন বায়ার রা মার্কেটপ্লেস এ আপনার পেমেন্ট দিবে তা আপনি কিভাবে আপ্নার কাছে আনবেন?
মার্কেটপ্লেস এর একাউন্ট থেকে টাকা তোলার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো PayPal,যেটা আমাদের দেশে সাপোর্ট করে না।এছাড়াও আছে Payoneer এবং Bank Wire.
মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা নিবেন Payoneer এ এবং সেখান থেকে সরাসরি আপ্নার ব্যাংকের এটিএম বুথে।
একটা কস্টের কথা শেয়ার করি আপনাদের সাথে। হুট করে আমার ল্যাপটপ, ডেস্কটপ একবার নষ্ট হয়ে গেলো।
যেহেতু আমি একজন রাইটার, এবং আমার হিউজ প্রজেক্ট তখন রানিং! আর কিছু পার্সোনাল কারনে আমি আমার কম্পিউটার গুলো ও ঠিক করাতে পারছিলাম না।
তো এই সময়ে আমি আমার এন্ড্রয়েড ফোনেই লিখতে আরম্ভ করলাম। গ্রামারলী টা ডিফল্ট ইন্সটল করে নিলাম ফোনে। এবং ধুমায়া লিখতে লাগলাম। আপ্নারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, এই এক ফোনেই আমি প্রায় ১৫০০০ ওয়ার্ড অব্দি লিখেছি।
প্রথম প্রথম আমার অনেক কস্ট হতো! কিন্তু কয়েকদিন পরে দেখলাম ফোনেই টাইপ করতে আমার বেশি সুবিধা হচ্ছে। হ্যা রিসার্চ করার জন্য আরেকটা ফোন হাতে থাকলে তো সুবিধা বহুগুণে বেড়ে যেতো।
তো আপনার প্রশ্নের জবাব হচ্ছে, হ্যাঁ আপনি ফোনে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে পারবেন।তবে সব কাজ অথবা কোন এডভান্স লেভেল এর কাজ আপনি মোবাইলে করতে পারবেন না।
লিখালিখির কাজ করতে পারবেন। গ্রাফিকস ডিজাইন এর টুকিটাকি প্রথম দিকের কাজ গুলো বিভিন্ন এপ্স এর সাহায্যে করতে পারবেন।ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারবেন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ গুলোও করতে পারবেন।
বাট,মোবাইলে কোন এডভান্স লেভেলের কাজ করতে পারবেন না। এবং খুব বেশি উপার্জন ও মোবাইল দিয়ে সম্ভব হবে না।
আপনি যদি একটা পিসি কেনার জন্য সময় নিতে চান, আমার সাজেশন হলো প্রথমে আপনি মোবাইল দিয়ে কয়েক মাস ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যাসিক কাজ গুলো করেন। কিছু টাকা জমান এবং এরপরে একটা ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ কিনে নেন।
অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন আসতে পারে যে ফ্রিল্যান্সিং কি হারাম নাকি হালাল। কারন অনেকেই লোকমুখে এমন কথা শুনে থাকেন যে অনলাইনে ইনকাম হারাম, খারাপ কাজ করে ইনকাম করতে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু আপনাদের কে বলে রাখি যে ফ্রিল্যান্সিং সম্পুর্ন হালাল, কারন আপনি মূলত অন্য কাওকে একটা কাজ করে দিচ্ছেন এবং তার বিনিময়ে আপনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। পাশাপাশি আপনি ঐ ব্যাক্তির উপকার ও করছেন তার কাজটি করে দিয়ে, এ কাজটি হারাম হবার প্রশ্নই উঠে না।
কিন্তু হ্যা, আপনি যদি এমন কোনো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেন যা ইসলাম বিরোধী যেমন, কোনো পর্ন সাইট বানানো, পর্ন ভিডিও এডিটিং, বা মানুষের ও সমাজের ক্ষতি করে এমন কোনো প্রজেক্ট নিয়ে যদি কাজ করেন তবে তা অবশ্যই হারাম।
আবার আপনি যদি কোনো ক্লায়েন্ট কে তার চাহিদা মত কাজটি না করে টাকা নেন, বা তার সাথে কোনো প্রতারনা করেন তাহলেও সেটি হারাম হবে।
আসলে সহজ কথায় ফ্রিল্যান্সিং হারাম না, আপনি কোন কাজটি করে ফ্রিল্যান্সিং করছেন সেটার উপর ভিত্তি করে আপনার কাজ কে হারাম বা হালাল বলা হবে।
তাই এমন কোনো কাজের সাথে যুক্ত হবেন না যা আপনাকে পরকালের শাস্তির দিকে ঠেলে দিবে। অনেক সময় এসব কাজের বিনিময়ে আপনাকে অনেক টাকা দেবার অফার ও আসতে পারে, কিন্তু আপনাকে হারাম ও হালাল কাজকে বেছে কাজ করতে হবে।
অনেক বড় একটা আর্টিকেল লিখে ফেললাম! মোটামোটিভাবে একজন নিউবির মনে যত ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে, চেষ্টা করেছি সব এই আর্টিকেল এ বিস্তারিত উল্লেখ করতে।
ফ্রিল্যান্সিং এ যদি সত্যিই আপনি আপনার ক্যারিয়ার সেট করতে চান,আমার সাজেশন হলো আগেই যে কোন সহজ কাজ দিয়ে শুরু করেন। এরপর ফ্রিল্যান্সিং এর হাওয়া বাতাস সব যখন নিজেই বুঝে যাবেন সুইচ অন করেন কিছুটা টাফ অথচ আপনার মনের মতোন এরকম কোন ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে।
আমরা অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ খুব কঠিন ভাবি। এবং ভয়ের চোটেই যথেষ্ট ক্যাপাবল হওয়া সত্তেও হারিয়ে যায় মাঝ সমুদ্রে!
আবার অনেকেই আছেন ভাবেন দুইদিন না যেতেই কারি কারি টাকা ইনকাম করা যাবে এই সেক্টর থেকে। এরা মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং খুব সহজ, এখানে টাকা এমনি এমনি উড়ে!!
ফ্রিল্যান্সিং সহজ বা কঠিন কোনটাই না অথবা দু'টোই।ব্যাপারখানা সম্পুর্ণ নির্ভর করে আপনার ইচ্ছা ক্ষমতা এবং রিযিকের উপরে!
আপনি যদি সময় নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে যে কোন কাজেই লেগে থাকেন, উন্নতির চরম শিখরে উঠতে কে আটকাবে আর আপনাকে!
অপেক্ষায় রইলাম ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড যে কোন প্রশ্নের।
আর্টিকেলটি সম্পুর্ন পড়ে থাকলে কমেন্ট এ "DONE" লিখুন, কোনো প্রশ্ন থাকলে বা হেল্প দরকার হলে অবশ্যই কমেন্টে লিখুন।
আরও পড়ুন
Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।