BANGLADESH
Welcome to Detailsbd.com

সংবাদপত্র রচনা - ৯ পয়েন্ট

Category - 
ghore bose spoken english
২৮% ডিসকাউন্টে পেতে আজই এই লিংক থেকে কোর্সটি কিনুন
সবগুলো রচনা দেখতে এখানে ক্লিক করুন
5/5 - (1 vote)

সংবাদপত্র রচনা টি ৯ টি পয়েন্ট ও ১০০০ শব্দ দিয়ে বানানো। এতে কোনো অযথা পয়েন্ট ও লাইন যোগ করা হয়নি, যা সকল পরীক্ষায় ফুল মার্কস পেতে সাহায্য করবে।

রচনাঃ সংবাদপত্র

ভূমিকা : জাতীয়, আন্তর্জাতিক এবং দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাপ্রবাহের তথ্য নিয়ে যেসব পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়, তার নাম সংবাদপত্র। মানুষের জানার আগ্রহ ও তথ্য সংগ্রহের প্রবণতা থেকে সংবাদপত্রের উৎপত্তি। মানবজীবনের নানা প্রয়োজন সাধনে এর স্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞান বিকাশে

সামাজিক দায়িত্ব পালনে, জনমত গঠনে, শিক্ষা বিস্তারে সংবাদপত্র বর্তমান বিশ্বে মানবজীবনের এক অপরিহার্য অঙ্গ। একটি সংবাদপত্র সত্য, সুন্দর এবং সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। 

সংবাদপত্রের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

প্রথম সংবাদপত্রের প্রচলন হয় চীন দেশে। এদেশে মুঘল আমলে শাসনকার্যের সুবিধার জন্য সংবাদ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সংবাদপত্র এদেশে প্রচলিত হয় ইংরেজ শাসনামলের শুরুতে। ছাপাখানার প্রসারের ফলে সংবাদপত্র প্রকাশ ও প্রচার সহজ হয়েছে। বাংলাদেশের তথা ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র 'বেঙ্গল গেজেট'। এই ইংরেজি সাময়িকপত্রটি জেমস আগাস্টাম হিকি কর্তৃক ১৭৮০ সালের ১৯ জানুয়ারিতে প্রথম প্রকাশিত হয়। তারপর ইন্ডিয়া গেজেট, ক্যালকাটা গেজেট, হরকরা ইত্যাদি পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল । বাংলা ভাষায় প্রথম সাময়িকপত্র 'দিগদর্শন'। জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনায় এটি প্রকাশিত হয় ১৮১৮ সালের এপ্রিল মাসে শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন থেকে। ১৮১৮ সালের মে মাসে জে.সি. মার্শম্যানের সম্পাদনায় শ্রীরামপুর মিশন থেকে সাপ্তাহিক ‘সমাচার দর্পণ' প্রকাশিত হয়। ১৮১৮ সালেই প্রকাশিত হয় বাঙালি পরিচালিত প্রথম পত্রিকা। গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য কর্তৃক সম্পাদিত সাপ্তাহিক 'বাঙ্গাল গেজেট'। রামমোহন রায় ও ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাপ্তাহিক 'সম্বাদ কৌমুদী' প্রকাশ করেন ১৮২১ সালে। এরপর ১৮২২ সালে সাপ্তাহিক 'সমাচার চন্দ্রিকা' ও ১৮২৯ সালে সাপ্তাহিক ‘বঙ্গদূত' প্রকাশিত হয়। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক 'সংবাদ প্রভাকর' দৈনিক পত্রিকায় পরিণত হয়। এমনিভাবে বাংলা সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রের ইতিহাস অগ্রসর হয় সামনের দিকে। তারপর একে একে প্রকাশিত হয় অনেক পত্রিকা ।

আরও পড়ুন  সময়ানুবর্তিতা রচনা - SSC, HSC

সংবাদপত্রের প্রয়োজনীয়তা

বিভিন্ন গণসংযোগ মাধ্যমের মধ্যে সংবাদপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সমগ্র বিশ্বে কোথায় কী ঘটছে তা জানার জন্য মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। সংবাদপত্রের মাধ্যমে তা জানা যায়। এতে মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়ে। সারা বিশ্বের মানুষের চিন্তাধারার সঙ্গে সংবাদপত্রের মাধ্যমে পরিচিত হওয়া যায়। আবার কোথায় কী আবিষ্কৃত হয়েছে তা জানা যায় সংবাদপত্রের মাধ্যমে। আশ্চর্য ঘটনা, আনন্দদায়ক সংবাদ, জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা কথা সংবাদপত্রে প্রচারিত হয়। সংবাদপত্রের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। ঘরে বসে বিদেশের বহু খবর জানা যায়। জানার জন্য সংবাদপত্র সব সময় কাজে লাগে। সংবাদপত্রের এই প্রয়োজনীয় দিকটি ছাড়া আরও অনেক উপকারের দিক রয়েছে। নানা বিষয়ের আলোচনা এতে উপস্থাপিত হয়। সাহিত্য সম্পর্কে যেমন আলোচনা থাকে, তেমনি থাকে সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে নানা ধরনের প্রবন্ধ নিবন্ধ। সংবাদপত্রে মানুষের চিন্তাচেতনার প্রতিফলন ঘটে। দৈনন্দিন খবরাখবর ছাড়াও সংবাদপত্রে থাকে নানা অভিযোগ, চাকরির খবর, বিজ্ঞাপন, খেলাধুলার খবর, শিক্ষা বিষয়ক বিদ্যালয়ে ভর্তির সংবাদ, পরীক্ষার ফল প্রকাশের সংবাদ, নানা রোগ-ব্যাধি ও তার প্রতিকারের আলোচনা, ওষুধপত্র আবিষ্কারের সংবাদ, সম্পাদকের মন্তব্য ইত্যাদি। সংবাদপত্রে নানা বিভাগ থাকে যেমন: মহিলা বিভাগ, শিশুদের বিভাগ, চিঠিপত্র বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, জনমত বিভাগ, সাহিত্য বিভাগ, ধর্ম, বাড়ি ভাড়া, নিখোঁজ সংবাদ, খেলাধুলা বিভাগ ইত্যাদি। এসব বিভাগ থেকে নানা খোঁজখবর এবং জ্ঞান লাভ করা যায়। কাজেই আধুনিক জীবনে সংবাদপত্রের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। 

সংবাদপত্রের প্রকার

সংবাদপত্র নানা প্রকারের হতে পারে। যেমন – দৈনিক, সাপ্তাহিক, অর্ধ-সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক ইত্যাদি। আমাদের দেশের পত্রপত্রিকাগুলোর মধ্যে দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক আল …ইহ্সান, দৈনিক মানবজমিন, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক ভোরের কাগজ সাপ্তাহিক বিচিত্রা, সাপ্তাহিক পূর্ণিমা, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, সাপ্তাহিক রোববার, সাপ্তাহিক যায় যায় দিন, সাপ্তাহিক আজকের সূর্যোদয়, পাক্ষিক স্বাগতম, অন্যদিন, মাসিক আল বাইয়্যিনাত, মাসিক আগমন, মাসিক ছুটির দিন, মাসিক চাঁদনী, মাসিক আলোছায়া ত্রৈমাসিক নতুন দিগন্ত, সাঁকো প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুন  বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা - ১৫ পয়েন্ট

সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম

সংবাদপত্রের সমৃদ্ধি ও বিকাশের সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহের সম্পর্ক বিদ্যমান। সংবাদ সংগ্রহের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। 'বাসস' বাংলাদেশের সংবাদ সংগ্রহের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে দেশ বিদেশের নানা জায়গা থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে। সংবাদ সংগ্রহ করে টেলিপ্রিন্টার ও আধুনিক কম্পিউটার যন্ত্রের সাহায্যে তা খুব সহজে অল্প সময়ে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব সংবাদ বাছাই করে পরিবেশন করা হয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে। এ ধরনের সংবাদ সরবরাহকারীদের মধ্যে 'রয়টার' একটি বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে প্রত্যেক সংবাদপত্রের নিজস্ব সংবাদদাতা থাকে। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে পাঠায় এবং তা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এসব সংবাদ সংগ্রহের ফলে সমগ্র বিশ্বে কোথায় কী ঘটছে তার খবর খুব সহজে সকল পত্রিকার অফিসে পৌঁছে যায়। পরের দিন আমরা ঘরে বসে সেসব খবর জানতে পারি সংবাদপত্রের মাধ্যমে।

শিক্ষা বিস্তারে সংবাদপত্র

সংবাদপত্রের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা, তথ্য প্রকাশ করা ও বিশেষকরে জ্ঞান লাভে প্রণোদিত করা। সংবাদপত্র বহুক্ষেত্রে পাঠককে কোনো বিশেষ ব্যাপারে অংশ নিতে প্ররোচিত করে। মানুষ সুশিক্ষিত হলে, তথ্য সম্পর্কে অভিজ্ঞ হলে তার মনের জড়তার মুক্তি ঘটে। তখন প্রখর সত্যের আলোকে কোনটি সত্য এবং কোনটি অসত্য তা সে চিনতে শেখে। উনিশ শতকের বাংলায় যে নবজাগরণের উদ্বোধন ঘটেছিল, তাতে বিরাট ভূমিকা ছিল সংবাদপত্রের। সংবাদপত্র পাঠ করেই মানুষ জানতে পেরেছিল, বুঝতে পেরেছিল, কেন দেশে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটা উচিত, বাল্যবিবাহ সমাজে ও জীবনে কতখানি ক্ষতিকর, বিধবা বিবাহ কতখানি শাস্ত্রসম্মত, অন্ধ ধৰ্মচেতনা জ্ঞান ও শিক্ষার প্রসারকে কতখানি আবদ্ধ করে রাখে। সংবাদপত্র পাঠকেরা ধীরে ধীরে উপলব্ধি করেন সমাজ পরিবর্তনের মর্মবাণী। তাঁদের এ চিন্তা তাঁদেরকে নতুন সমাজ ভাবনায় উত্তরণ ঘটায়। বর্তমানে আমাদের সংবাদপত্রগুলোতে শিক্ষা বিভাগ চালু হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে এবং শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

আরও পড়ুন  পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা - Class 3, 4, 5, 6, 7

জনমত গঠনে সংবাদপত্র

জনমত গঠনে সংবাদপত্রের অপরিমিত শক্তি আছে। সংবাদপত্র কোনো বিষয়ে সমাজের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি, সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং দেশের সংহতি ও প্রগতিকে বিনষ্ট করে দিতে পারে। কারণ, সংবাদপত্র অধিকাংশ দেশেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত। রেডিও এবং টেলিভিশন যেখানে নানারকম নিয়ন্ত্রণের চাপে সোচ্চারে কথা বলতে পারে না, সেখানে একমাত্র সংবাদপত্রই বহুলাংশে স্বাধীন ও প্রকৃত জনমত প্রকাশ করতে সমর্থ। তাছাড়া রেডিও টিভি'র চেয়ে সংবাদপত্রের স্থায়িত্ব অনেক বেশি। সংবাদপত্রের কোনো খবর বারবার পড়া যায় এবং পরবর্তীকালে ব্যবহারের জন্য রেখে দেওয়া যায়। সংবাদপত্র হাতে হাতে ঘোরে। তাই রেডিও টিভি'র প্রবল প্রচারের যুগেও সংবাদপত্রের গুরুত্ব এখনো কমে যায় নি। তবে নানা মত ও অভিমতের সংঘর্ষে সংবাদপত্রের পাঠকের ব্যক্তিগত মতাদর্শ অনেক সময় পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বিশেষকরে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে জনসাধারণের অভিমত ঐক্যসূত্রে গ্রন্থিত হয়ে ক্রমশ আন্দোলনে রূপ নেয়। সামাজিক ধ্যান-ধারণার ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসে ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়াটার গেট’ ও ‘ভিয়েতনাম যুদ্ধ’ সংবাদপত্রের জনমত গঠনের দুটি জ্বলন্ত উদাহরণ ।

সংবাদপত্রের অপকারিতা

সংবাদপত্রের অনেক উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু অপকারিতাও আছে। কখনো কখনো মিথ্যা, উদ্ভট খবর প্রচার করে পাঠককে বিভ্রান্ত করে থাকে। এতে মানুষ এবং দেশের ক্ষতি হয়। সংবাদপত্রের মালিকানা ব্যক্তিগত বলে মালিকের খেয়ালখুশিমত তা পরিচালিত হয়। কোনো কোনো পত্রিকা রাজনৈতিক দলের মুখপত্র হিসেবে বানোয়াট খবর প্রচার করে, এতে দেশ ও জনগণের উপকারের চেয়ে অপকার হয়   বেশি। 

উপসংহার

সংবাদপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি বলেছিলেন, সরকারহীন সংবাদপত্র চাই, না সংবাদপত্রহীন সরকার চাই, আমি প্রথমটাই বরণ করে নেব।” সংবাদপত্র একটি দেশের উন্নতি, অবনতি বা জনমত গঠনের প্রধান হাতিয়ার।

সংবাদপত্র রচনা টি ভালো লেগে থাকলে এবং আপনার উপকারে আসলে কমেন্ট এ ধন্যবাদ লিখতে পারেন এবং রচনা টি শেয়ার করতে পারেন।

 Share this post from here. 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram