পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা টি ১০ টি পয়েন্ট ও ৮০০ শব্দ দিয়ে বানানো। এতে কোনো অযথা পয়েন্ট ও লাইন যোগ করা হয়নি, যা SSC ও HSC পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পেতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
“যে মাতাপিতাকে সন্তুষ্ট করে,
-আল কুরআন
সে আমাকে সন্তুষ্ট করে।”
পিতামাতা আমাদের জন্মদাতা। পিতামাতার সমতুল্য আপনজন পৃথিবীতে আর নেই। সংস্কৃতিতে একটা কথা আছে, “জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।” অর্থাৎ, জননী ও জন্মভূমি স্বর্গ হতেও শ্রেষ্ঠ। মহানবি হযরত মুহম্মদ (স) বলেছেন, “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত।” কেননা, ভূমিষ্ঠ হবার আগে ও পরে সন্তানের জন্য মা-ই সবচেয়ে বেশি দুঃখকষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেন। সেই সাথে পিতাও। তাঁদের ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকারের জন্যই সন্তান বড় হতে পারে। তাঁরা পৃথিবীতে মহান আল্লাহর রহমত স্বরূপ। সন্তান জন্মের পর থেকেই পিতামাতা নিজেদের সুখের কথা ভুলে গিয়ে সন্তানের সুখের কথা ভাবেন। সন্তানকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। তাই পিতামাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য অনেক ।
পিতামাতার জন্যই সন্তান এই সুন্দর পৃথিবীর রূপ-রস, আরাম আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছে। শিশুসন্তানের প্রতি পিতামাতার অবদান অপরিসীম ও বর্ণনাতীত। মা অতি কষ্টে দশ মাস দশ দিন সন্তানকে তাঁর গর্ভে ধারণ করেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকেই মা অসুস্থ ও দুর্বল শরীর নিয়ে সন্তানের সেবাযত্ন করেন। মাতৃস্তন্য পান করে শিশু বেঁচে থাকে। সন্তানের জন্য বাবা মায়ের চিন্তার যেন শেষ নেই। নিজেদের আরাম আয়েশ ভুলে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে পিতামাতা সন্তানদের বড় করে তোলেন এবং লেখাপড়া শেখান সন্তানের আহার যোগাড় করেন। সন্তানের জীবনে পিতা মাতার অবদান অপূরনীয়।
সন্তান যাতে সুশিক্ষা লাভ করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য পিতামাতার চেষ্টার অন্ত থাকে না। প্রত্যেক পিতামাতাই তাঁদের সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে চান। পিতা নিজে কষ্ট স্বীকার করেও সন্তানের জন্য ধন সঞ্চয় করে যেতে চেষ্টা করেন। তাঁদের এরূপ নিঃস্বার্থ ত্যাগের তুলনা নেই। সন্তানের কোন অসুখবিসুখ হলে পিতামাতার তখন চিন্তার শেষ থাকে না। আহার নিদ্রার কথা ভুলে গিয়ে তাঁরা তখন সন্তানের আরোগ্য লাভের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাত তুলে দোয়া চান সন্তানের জন্য । এমনকি নিজের জীবনের বিনিময়ে তাঁরা সন্তানের জীবন ভিক্ষা চান। মাতাপিতার এরূপ অবদান অতুলনীয়।
মানুষের মতো মানুষ হয়ে পিতামাতার মুখ উজ্জ্বল করা সন্তানের অন্যতম কর্তব্য। সন্তান যদি সুশিক্ষিত হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সমর্থ হয় ও সুনাম অর্জন করতে পারে, তবে পিতামাতা সবচেয়ে বেশি সন্তুষ্ট হন এবং গৌরববোধ করেন। পিতামাতার সন্তান হিসেবে প্রত্যেক ছেলেমেয়ের মনে রাখা উচিত, যেহেতু বাবা মা সবসময় সুখেদুঃখে, বিপদে আপদে সর্ব অবস্থায় তাদের কল্যাণ কামনা করেন, সেহেতু তাদের উচিত পিতামাতার উপদেশ নির্দেশ মেনে চলা।
আমরা অনেক সময় পিতামাতার আদেশ নির্দেশ পালন করি না। বরং কখনো কখনো তাঁদের উপদেশের বিপরীত কাজ করে থাকি। এতে পিতামাতা যে কতটা মানসিক কষ্ট ভোগ করেন সন্তান ছোট হোক, বড় হোক, বুদ্ধিমান কিংবা বুদ্ধিহীন হোক, পিতামাতা সব সময় তার মঙ্গল কামনা করেন। সন্তান যদি পিতামাতার উপদেশ ও নির্দেশ মেনে চলে তবে সেটা যেমন সন্তানের জন্য মঙ্গলজনক তেমনি সমাজের জন্যও কল্যাণকর।
সন্তান যদি চরিত্রবান হয়, জ্ঞানীগুণী বলে সমাজের প্রশংসা পায়, তাহলেই পিতামাতার ঋণ কিছুটা পরিশোধ হতে পারে। তাই পিতামাতার মুখ উজ্জ্বল করা ও তাঁদের গৌরব বৃদ্ধি করার জন্য প্রত্যেক সন্তানেরই তৎপর হওয়া উচিত। কিন্তু সন্তান যদি পিতামাতার অবাধ্য হয় এবং উচ্ছৃঙ্খলতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়, তবে তার জীবনে সাফল্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। পিতামাতার আদেশ নির্দেশ অমান্য করে চলার অর্থ হচ্ছে জীবনে ব্যর্থতাকে বরণ করা। ফলে তাদের চারিত্রিক অধঃপতন ঘটবে আর সমাজের কাছে নিন্দার পাত্র হবে। পিতামাতা সন্তানের মঙ্গলের কথা ভেবে তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে বলেন।
সন্তান যদি লেখাপড়ায় ফাঁকি দেয় এবং মানুষ না হয়ে অমানুষ হয়, তবে তারা বড় হয়ে অর্থাভাবে কষ্ট ভোগ করে। তখনই তারা পিতামাতার উপদেশের তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারে। কিন্তু তখন শুধু অনুতাপে দগ্ধ হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।পিতামাতার সেবা শুশ্রূষা করা সন্তানের প্রধান কর্তব্য। তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এতটুকু দেরি করা যাবে না, কেননা তাতে তাঁরা মনে কষ্ট পেতে পারেন। তাঁদের সেবাযত্নের বিন্দুমাত্র ত্রুটি যাতে না ঘটে, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে।
পিতামাতার বৃদ্ধ বয়সে উপযুক্ত সন্তান স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে অন্যত্র চলে গেলে সে মহাপাপী হবে। সন্তানের সবসময় মনে রাখতে হবে, শিশুকালে পিতামাতা তাকে মানুষ করে তোলার জন্য যত্ন নিয়েছেন, লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং বড় হলে সুখে শান্তিতে বসবাসের জন্য যথারীতি চেষ্টা চালিয়েছেন। তাই আজীবন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও সন্তানের কর্তব্য পালন করা হবে না, বৃদ্ধ বয়সে পিতামাতা যাতে সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারেন সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিতে হবে এবং তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি কোনো সন্তান পিতামাতার প্রতি অযত্ন ও অবহেলা দেখায় তবে তার পাপের শেষ থাকবে না ।
প্রত্যেক ধর্মেই পিতামাতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে এবং তাঁদের সন্তুষ্টি বিধান করতে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন শরীফে ভক্তি ও শ্রদ্ধার ক্ষেত্রে আল্লাহর পরেই পিতামাতার স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। হযরত আবদুল কাদের জিলানী (র), হযরত বায়েজীদ বোস্তামী, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখ পিতামাতার বাধ্য ও অনুগত ছিলেন। এজন্য তাঁরা আজ স্মরণীয় হয়ে আছেন। সুতরাং তাঁদের মনে কষ্ট হয় এমন কাজ কখনো করা উচিত নয়। নানা ধর্মে ও নানা মতে ব্যক্ত পিতামাতার এই সম্মান রক্ষার দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রত্যেক মানব সন্তানকে সচেতন হওয়া দরকার।
পিতামাতা সন্তানের পরম হিতৈষী। এমন আপনজন দুনিয়াতে আর কেউ নেই। অল্প বয়সে যে ব্যক্তি পিতামাতাকে হারায় সে এ জগতে সত্যি ভাগ্যহীন। পিতামাতার স্নেহ, মায়ামমতা বেহেশতের শ্রেষ্ঠ দান। তা যে ব্যক্তি বেশিদিন ভোগ করতে পারে, তার জীবন বেশি ধন্য হয়।এবং মর্যাদা লাভ করা যায়। হয় পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য পালনের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করে পৃথিবীতে স্মরণীয়,বরণীয় এবং মর্যাদা লাভ করা যায়।
পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা টি ভালো লেগে থাকলে এবং আপনার উপকারে আসলে কমেন্ট এ ধন্যবাদ লিখতে পারেন এবং রচনা টি শেয়ার করতে পারেন।
Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
Thamks
welcome brother
Thanks
অসংখ্য ধন্যবাদ
Thanks🌸💖💖
Welcome
Thank you very much 😊