অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম রচনা টি ১০ টি পয়েন্ট ও ১০০০ শব্দ দিয়ে বানানো। এতে কোনো অযথা পয়েন্ট ও লাইন যোগ করা হয়নি, যা সকল পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পেতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
ভূমিকা : পৃথিবীব্যাপী কখনো কখনো এমন ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি হয় যাতে সারা পৃথিবীই প্রায় অচল হয়ে পড়ে। তখন মানুষকে নিজেদের সক্রিয় অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বিকল্প কিছু খুঁজে নিতে হয়। শিক্ষাক্ষেত্রেও পৃথিবীব্যাপী দিনে দিনে প্রযুক্তি বা এডুটেক-এর প্রসার ঘটে চলেছে। উদ্ভাবিত হচ্ছে নতুন কিছু ধারণা, নতুন কিছু কৌশল । এমনই একটি প্রাযুক্তিক কৌশল হলো অনলাইন শিক্ষা, যা স্থবির শিক্ষাক্ষেত্রকে প্রাণবন্ত করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট রয়েছে।
অনলাইন শিক্ষা হলো এমন একটি নমনীয় শিক্ষা কার্যক্রম যা ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘরে বসেই গ্রহণ করা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনলাইন লাইভ শিক্ষা কার্যক্রমই হলো অনলাইন স্কুল। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলমান যে ক্লাসগুলো ধারণকৃত থাকে সেখান থেকেও শিক্ষার্থীরা যার যখন যেটুকু দরকার তা সুযোগমতো গ্রহণ করতে পারে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা কোভিড ১৯-এর কারণে মারাত্মক স্থবির অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষককর্মচারী, অভিভাবক, শিক্ষা-গবেষক ও শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই দীর্ঘ সময়ের স্থবিরতা এবং এর মারাত্মক প্রভাব নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন । এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য অনলাইন স্কুল কার্যক্রমের বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যুক্ত রাখতে এবং তাদের মানসিক সাপোর্টের জন্য অনলাইন ক্লাসই হতে পারে একমাত্র কার্যকর পদ্ধতি।
বিশ্বের ধনী-গরিব প্রায় প্রতিটি দেশই মাইক্রোসফট, ফেসবুক, জুম, জিএসএমএ, গুগল, কোর্সেরার মতো মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে কোভিড-১৯ সময়কালে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ঘরে রাখতে, লেখাপড়ায় সম্পৃক্ত করতে তথা মানসিক স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অনলাইন স্কুল কার্যক্রম সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে- এই ব্যাপারে সবাই আশাবাদী। ইউরোপ-আমেরিকা ছাড়াও অনেক উন্নত দেশেই এখন এটি জনপ্রিয় মাধ্যম ।
সময়ের জনপ্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলতে এখন অনলাইন স্কুলকেই বোঝায়। ইন্টারনেটের অনলাইন স্কুলের প্রতি ক্রমশ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে। বাংলাদেশে অনলাইন স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছে '১০ মিনিট স্কুল'-এর মাধ্যমে। ২০১৫ সালে গড়ে ওঠে '১০ মিনিট স্কুল'। ফেসবুকের লাইভ ফিচার ব্যবহার করে ২০১৬ সালের জুন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি লাইভ ক্লাসের আয়োজন করে আসছে। এর পর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে রেপটো এডুকেশন সেন্টার, ই-শিখন-কম, স্টাডিপ্রেস, ই-স্কুল, এডুকার্নিভাল, এডুকেশন বাংলাদেশ, রেপটো এডুকেশন সেন্টার ইত্যাদি।
প্রাণঘাতী করোনার মরণ ছোবলে বাংলাদেশও ভয়াবহভাবে' আক্রান্ত। এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প হিসেবে সরকার প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা চলমান রাখার জন্য সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আইসিটি ডিভিশনের এটুআই প্রোগ্রামের কারিগরি সহায়তায় টেরিস্টেরিয়াল চ্যানেল ‘সংসদ টিভি'র মাধ্যমে ক্লাস সম্প্রচার শুরু করেছে। ঘরবন্দি সময়টাতে পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় চালু করেছে ‘কিশোর বাতায়ন' কার্যক্রম। অনলাইন ক্লাস, ফেসবুকে লাইভ ক্লাসও শুরু হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে কার্যক্রম শুরু করেছে। গুগল ক্লাসরুম কিংবা অন্যান্য কোলাবোরেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে শিক্ষকরা একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ইন্টার্র্যাকটিভ ক্লাস নিচ্ছেন। বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করেছে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, রাজধানীর বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শহর ও শহরতলির কিছু স্কুল অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্লাস ও পরীক্ষা নিচ্ছে ।
বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া যায়। স্কুল বা কলেজে যেতে হয় না বলে যাতায়াতের সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচে। ক্লাস লেকচার এক মিনিটেই কপি করে যার যার কম্পিউটার, মোবাইল, প্রোফাইলে সেভ করে রাখা যায়, তাই নোট করার কোনো ঝামেলা নেই। অ্যাকাডেমিক ক্লাসে একটি দিন উপস্থিত হতে না পারলে ওই দিনের লেকচার পরে আবার বোঝার সুযোগ থাকে না। কিন্তু অনলাইন ক্লাসের লেকচার ছাত্রছাত্রীর নির্দিষ্ট পেজে সুরক্ষিত থাকে ।
করোনা মহামারীর দুঃসময়ে অনলাইন শিক্ষা যেমন অপরিহার্য, তেমনই এই শিক্ষার সমস্যা ও বেশ প্রকট।যাদের ল্যাপটপ -কম্পিউটার -মোবাইল -ইন্টারনেট সুবিধা নেই তারা অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনলাইন ক্লাসের বড় সমস্যা হলো অনেক শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন নেই। স্মার্টফোন থাকলেও অনলাইন ক্লাস করার জন্য যে পরিমান ডেটার প্রয়োজন সেই মুল্যের রিচার্জ করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। তাছাড়া রয়েছে নেটওয়ার্ক এর সমস্যা। বহু জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ তেমন থাকে না, খুব ওঠানামা করে। স্মার্টফোন ব্যবহারেও অনেক শিক্ষার্থী-শিক্ষক অভিভাবকের তেমন দক্ষতা নেই।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি সহ অন্যান্য ফি বা খরচ দেওয়ার সামর্থ এখন অনেকেরই নেই। সবচেয়ে বড় কথা, এই মহামারীর সময়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখে সুস্থ্য থাকা যখন বড় চ্যালেন্জ তখন এসব ব্যায়বহুল খরচ জোগাড় করা সত্যিই অসম্ভব।
১. প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করে সমযোপযোগী করে গড়ে তোলা।
২. বেসরকারি/ননএমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধের ব্যবস্থা করা।
৩. শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, সেমিস্টার ফি মওকুফ করা বা কমানোর ব্যবস্থা করা।
৪.অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের বিনা পয়সায় ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ নিশ্চিত করা।
৫.এ ক্ষেত্রে সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারদের সঙ্গে এই সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন করা ।
৬. যারা একেবারেই অসচ্ছল তাদের প্রয়োজনমতো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট মোবাইল ফোন সেট সরবরাহ করা।
দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে বাড়িতে,বাসায় বসে থাকা শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ের পক্ষেই কঠিন হয়ে পড়েছিলে।শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলো। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই বিকল্প ব্যবস্থায় অর্থাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার সুবিধা গ্রহণ করে স্বচ্ছন্দে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে। এভাবেই কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে তাদের জীবন।
অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম রচনা টি ভালো লেগে থাকলে এবং আপনার উপকারে আসলে কমেন্ট এ ধন্যবাদ লিখতে পারেন এবং রচনা টি শেয়ার করতে পারেন।
Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।