ঢাকা মেট্রোরেল রচনাটি ১০ টি পয়েন্ট দিয়ে বানানো এবং এতে কোনো অযথা পয়েন্ট ও লাইন যোগ করা হয়নি, যা পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পেতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
বর্তমান সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে ঢাকা মেট্রোরেল অন্যতম। বিশ্বের জনবহুল মেগা সিটিগুলোর মধ্যে ঢাকা অত্যধিক ঘনবসতিপূর্ণ।
এর বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। ঢাকার ভয়াবহ যানজট ও ট্রাফিক সমস্যা দূর করার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প একটি সময়োচিত ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বিপুল সংখ্যক যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহনই হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা। তাই ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও যানজট নিরসনে মেট্রোরেল ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
মেট্রোপলিটন রেল-এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো মেট্রোরেল। মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো স্পর্শ করে গণপরিবহনের জন্য প্রতিষ্ঠিত রেলব্যবস্থাই মেট্রোরেল। এটি একটি বিদ্যুৎচালিত পরিবহন। ঢাকা মেট্রোরেল ব্যবস্থার প্রকল্পটির নাম 'ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট'। এটি একটি দ্রুতগামী, স্বাচ্ছান্দময়, সুবিধাজনক ও নিরাপদ নগরকেন্দ্রিক রেলব্যবস্থা।
জনবহুল রাজধানী শহর ঢাকা যানজটের শহর হিসেবেই বিশেষভাবে পরিচিত। এই শহরে সকাল-দুপুর-বিকেল-রাত সবসময়ই যানজট লেগে থাকে। এখানে বাস, ট্রাক, কার, অটোরিকশা, বাইক আর রিকশা মিলিয়ে কয়েক লাখ যান প্রতিদিন চলাচল করে। দুতিন ঘণ্টা আগে রওয়ানা হয়েও সঠিক সময়ে কখনো গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না।
রাস্তায় যানজটে রীতিমতো নাকানি-চুবানি খেতে হয় যাত্রীদের। ইতোমধ্যে সরকার বেশ কয়েকটি উড়াল সেতু, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস, লিংকরোড ইত্যাদি নির্মাণ করেছে। কিন্তু যানজট খুব একটা নিরসন হয়নি। এ কারণে যাত্রীদের সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বাসের অপেক্ষায়। সিএনজি বা রিকশা চালকদের হাতেও জিম্মি হতে হয় কখনো কখনো। ঝড়, বৃষ্টি বা হরতালের সময় মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। এমতাবস্থায় মেট্রোরেল চালু হলে সময়ের অপচয় যেমন হ্রাস পাবে তেমনই নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সহজ হয়ে যাবে।
সাধারণ ট্রেন সার্ভিসের চেয়ে মেট্রোরেলের ট্রেনে অধিকতর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
পুরো ২০ দশমিক ০১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা প্রকল্পের ৮৫ শতাংশের ব্যয় বাবদ ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা দেবে কয়েক ধাপে। বাকি ৫ হাজার ৪ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।
মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১.১৬ কি.মি. বাড়ানোর কারণে প্রকল্প ব্যয় ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ।
২০২৪ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের মধ্যে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এবং ২০২৪ সালের মধ্যে কমলাপুর পর্যন্ত শেষ করার লক্ষমাত্রা নিয়ে দ্রুত কাজ এগিয়ে চলছে।
বিপুল জনসংখ্যার রাজধানী শহরে যানজট নিরসনে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা তথা স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান নিয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। ডিটিসিএ-এর তত্ত্বাবধানেই বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
যথাসময়ে প্রকল্পের সমাপ্তিতে যাত্রী পরিবহন শুরু হলে মেট্রোরেল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সরকার এ প্রকল্প থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবে এবং জিডিপি বৃদ্ধি পাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ অভিমত বাস্তবসম্মত ও তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়া মেট্রোরেলের স্বস্তিদায়ক সেবার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে ও নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু, প্রতিবন্ধী ও নারীরা দুর্বিষহ কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে। উল্লেখ্য যে, যাত্রীরা নির্ধারিত স্থান থেকে ওঠানামা করার ফলে গড়ে উঠবে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর ঢাকা মহানগরী।
অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের প্রথম এবং প্রধান শর্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। ২০২৪ সালের মধ্যে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি হবে একটি মাইলফলক। এর মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের অর্থ আর সময়ের অপচয় বন্ধ হবে। যানজটমুক্তভাবে মানুষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।
Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।