যে কোন কাজ শুরু করার আগেই তার সুবিধা অসুবিধা জানাটা অপরিহার্য। মনে করেন আপনি আগামিকাল কোথাও যাবেন জব এর ভাইবা দিতে-আপ্নি কি করবেন? আপনাকে যা করতে হবে, যেখানে ভাইবা দিতে যাবেন বিস্তারিত আগেই জেনে যাবেন।
উদাহরণ টা আরেকটু ক্লিয়ার করি। ধরেন আপনি আপনার লাইফের গোল সেট করলেন। লাইক আপনি ডাক্তার হবেন অথবা ব্যাংকার। তো আপনি যে পেশাটাকেই নিজের ফাইনাল গোল হিসেবে নেন না কেন, আপ্নাকে আগেই জানতে হবে এই পেশাতে কি সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো আছে।
সুবিধা অসুবিধা না জেনে মানুষ যেখানে ঘর থেকে এক পা ও বাইরে দেয় না, তেমনি আপনার ও আপনার পেশা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে, এখানে আপনি কি কি বেনেফিট পাবেন, এই জব এর এ টু জেড, এই জব আপ্নাকে স্যুট করবে কিনা, এই জবের সীমাবদ্ধতা গুলো কি কি ইত্যাদি।
তো আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করতে যাচ্ছেন।নিশ্চয়ই এটা আপনার স্বল্পমেয়াদী কোন পরিকল্পনা নয়। নিশ্চয়ই আপনি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করেই এই সেক্টরে আগাতে চাচ্ছেন।
যাই হোক, ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা অসুবিধা সব বিস্তারিত জেনে মাঠে নামুন যাতে অন্তত দুই দিন পরেই আবার মন না উঠে যায় অনলাইনের কাজকর্ম থেকে।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা অসুবিধা কেন জানবেন? দেখুন এটা ডিজিটাল যুগ। দুনিয়ার অন্য অত্যাধুনিক দেশ এর টেকনোলজির চাইতে আমাদের দেশে আমরা ধরতে গেলে কম সুবিধাই পাচ্ছি।
বাইরের দেশে যেখানে 5G চলছে ধুমায়ে আর আমাদের দেশে 3/4 G চালাতেই মাথার ঘাম পায়ে পরে যায়! আর আমরা যে নেট ইউজ করি সেটার দাম এর কথাও চিন্তা করেন, আমাদের দেশে এক জিবি ডাটা যে টাকা দিয়ে কিনি, বাইরের দেশে সেইম এমাউন্ট দিয়ে মিনিমাম দশ জিবি ডাটা কেনা যায়।
যাক, এবারে আসি ফ্রিল্যান্সার দের নিয়ে আমাদের দেশের মানুষের ধারনা।হাস্যকর হলেও সত্যি আমাদের দেশে মানুষ এখনো ইন্টারনেট এর মানেই পুরোপুরিভাবে জানেন না। সবাই মনে করেন, ইন্টারনেট মানেই ফেসবুক! হা হা হা-- এইসব ভুলভাল মনে করা নিয়ে আমারোও অভিজ্ঞতা কিন্তু অনেক ভালো নয়।
যেমন আমি সারাদিন ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকি, ফোনে সারাদিন কি করি, ইত্যাদি ইত্যাদি! অথচ আমি যে ফোন না ল্যাপটপে দুটা টাকা ইনকাম করার জন্য কত কস্ট করে লিখছি তা কিন্তু খোদ আমার বাসার কাজের বুয়া ও মানতে চান না।সবাই ভাবে আমি বুঝি ফেসবুকে ব্লা ব্লা করতেছি!
তো অনলাইনে কাজ করতে গেলে, টুকটাক, টুকটাক না বেশ ভালোই প্রযুক্তিগত সমস্যায় পরা লাগে। প্রথমেই সবার কাছে একটা গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করা লাগে যে ইয়েস ইউ আর ডুইং এ জব অনলাইন।
কারন আমাদের দেশে থেকে এই সেক্টরে কাজ করতে গেলে অবশ্যই হাজার হাজার সমস্যা,বাধা, প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।
কিন্তু একবার আপনি যদি স্ট্যাবল হয়ে যান-দেখবেন খাটি মধু কত বেশী মিষ্টি হয়!
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা গুলো আমি এখানে বুলেট করে আলোচনা করবো। আশা করি এতে আপনার সময় এবং ডাটা দু'টোই সেইফ হবে।
আপনি সম্পুর্ণ স্বাধীন ভাবে আপনার কাজের শিডিউল এখানে করতে পারবেন।যেহেতু মাথার উপ্রে আপনার কোন বস নাই, সো কাজের কোন প্যারা নাই, কেউ ইন্টারফেয়ার করতে আসবে না। আপ্নার যখন ইচ্ছা হবে,ভালো লাগবে, সময় থাকবে আপনি কোন প্রজেক্ট নিবেন। এমনকি কোন রানিং প্রজেক্ট ও যদি বাদ দিতে চান, দেরীতে সাবমিট করতে চান-ক্লায়েন্ট এর সাথে কথা বলে সুন্দর ভাবে তা করতে পারবেন। আর অপরদিকে ৯ টা ৫ টা অফিস এর গতবাধা নিয়মের কথা চিন্তা করে দেখেন, কেমন দম বন্ধ হয়ে আসে না?
হ্যাঁ আপনার হাতে অফুরন্ত সময়।আপনি যেভাবে ইচ্ছা এই সময় কাজে লাগাতে পারেন।চাইলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২০ ঘন্টা কাজ করতে অয়ারেন।আবার চাইলে ২৪ ঘন্টাই ঘুম দিয়ে কাটায় দিতে পারেন।এখানে আপনার সময় আপনি আপনার মত ইউটিলাইজ করবেন, নোবডি গোনা টু টেল ইউ এনিথিং এবাউট হাউ টু কঞ্জিউম ইউর টাইম।
কাজের সময় না শুধু ফ্রিল্যান্সিং এ আপনি যেখানে ইচ্ছা সেখানেই কাজ করতে পারবেন। শুধু দরকার আপনার ল্যাপটপ এবং নেট কানেকশন। চাইলে রাঙামাটি অথবা বান্দরবান ট্যুরে যেয়েও আপ্নি পাহাড়ের চূড়ায় কোন পাহাড়ি টঙে বসে আপনার ল্যাপটপে কাজে বুদ হইতে পারেন। আবার চাইলে ঘরে আপনার রুমে বসেও খেতে খেতে কাজ করতে পারেন।ধরেন আপনার ঘরে আপনার বাবা মা আছেন যাদের আপনার দেখাশোনা করা লাগে। তো এইক্ষেত্রেও আপনি আপনার বাবা মায়ের দেখাশোনা করার পাশাপাশি আপনার অনলাইন জব ও সুইটেবলি ঘরে বসেই করতে পারবেন।ফ্রিল্যান্সিং ইজ লাইক অল ইন ওয়ান জব।সো অনেক সুবিধা আসলে এই জবের।
শুধু যে এখানে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করার স্বাধীনতা পাচ্ছেন তা কিন্তু নয়। আপনি আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী আপ্নার কাজের মূল্য আপনি নিজেই ঠিক করতে পারেন।যেখানে চাকুরির ক্ষেত্রে আপনার চাকুরীদাতা আপনার স্যালারি নির্ধারণ করে দেয়, ফ্রিল্যান্সিং পুরোপুরি উলটো। নিজেই নিজের কাজের পেমেন্ট ফিক্সড করে নেওয়া যায়।
যদিও ফ্রিল্যান্সার দের বদনামের শেষ নাই।ফ্রিল্যান্সার রা নাকি সামাজিক না,,এরা সূর্যের আলো দেখেন না নাকি! তবে এটা একান্তই প্রত্যেক টা ফ্রিল্যান্সার এর ব্যাক্তিগত মেটার সে কতক্ষন কাজ করবে আর কতক্ষণ নিজের সময় ফ্রি রাখবে। মঝার ব্যাপার হলো সবাই কিন্তু কারি কারি ডলারের জন্য ফ্রিল্যান্সিং এ আসেন না। যেমন আমার এক বন্ধু আছেন, ট্রাভেলার। সে মুলত ফ্রিল্যান্সিং করেই তার ঘুরাফেরা করার টাকা ইনকাম করার জন্য!
হ্যাঁ, ফ্রিল্যান্সিং এ একক বা দল নিয়ে কাজ করার অপশন রয়েছে। অনেক হাই প্রোফাইল ফ্রিল্যান্সার রাই আছেন যারা কোন বড় প্রজেক্ট নেন এরপর নিজে টিম করে টিম মেম্বারদের দিয়ে সেই কাজ করিয়ে নেন।অনেকে আবার অফিস ও নিয়ে নেন টিমমেম্বারদের দিয়ে কাজ করানোর জন্য।
আপনি যত দ্রুত দক্ষ হতে পারবেন, যত দ্রুত পরিচিতি লাভ করতে পারবেন, তত দ্রুতই আপনি এই সেক্টর থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মুলধন ছাড়াই খুব দ্রুত টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে ভালো এবং অনেস্ট উপায়।
বিশেষ করে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রায়শই শোনা যায় ঘুস খেতে হয়, না হয় চাকুরী হারাতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে নিজে অনেস্ট থেকে টাকা আর্ন করার দারুন প্লেস।এখানে কেউ আপনাকে ঘুস দিতে আসবে না।আপনার ও কাউকে ঘুস দেওয়ার কোন স্কোপ এখানে থাকবে না।আপনি পুরোপুরি সৎ থেকেই মাস শেষে আপনার উপার্জনের টাকা গুণতে পারবেন।
কোন মুলধন ছাড়াই যখন আপনি টাকা উপার্জন করতে যাবেন,স্বাভাবিক সেখানে আপ্নাকে অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়েই এস্টাবলিশমেন্টে যেতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধাগুলো হচ্ছে-
Detailsbd.com একটি মাল্টিনিশ বাংলা ব্লগ সাইট যেখানে মূলত ব্লগিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্যবসা, টেকনোলজি, ও পড়াশোনা রিলেটেড বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এটি শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসের দিকে। এই সাইট টি আমার প্রথম ওয়েবসাইট তাই অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও আমি এই সাইটটিকে আমার কাছে রেখে দিয়েছি। আমার লেখা কোনো আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে অথবা মন্দ লাগে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।